খবরঃ
বিনোদন জগতের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত লস অ্যাঞ্জেলেসে ছয়টি দাবানলের মধ্যে তিনটি নিয়ন্ত্রণের পুরোপুরি বাইরে চলে গেছে। এরই মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের। প্রাণে বাঁচতে লস অ্যাঞ্জেলেসের ১ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। এদিকে দাবানলে বিপর্যস্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে লুটপাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় বোর্ড অব সুপারভাইজারসের প্রধান ক্যাথরিন বার্জার বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। দুর্বৃত্তরা পরিত্যক্ত ওই বাড়িগুলোয় লুটপাট চালাচ্ছে”। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
(www.amadershomoy.com/international/article/134174/লস-অ্যাঞ্জেলেসে-পুড়েছে-৫)
মন্তব্যঃ
সর্বশেষ খবর বলছে লুটপাট ব্যাপকতা লাভ করায় ইতিমধ্যে সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস আমেরিকার একটি অন্যতম প্রধান অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত। দাবানলের মধ্যে সেখানে অন্য অঞ্চল থেকে মানুষ এসে লুটপাট চালাবে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। মূলত: এই লুটপাট কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দাবানলের কারণে সুযোগ তৈরী হওয়ায় প্রচন্ড রকমভাবে ভোগবাদে অভ্যস্ত, লোভী ও নৈতিকতাহীন আমেরিকানদের আসল ‘নৈতিক’ চেহারা বের হয়ে এসেছে। ইতিপূর্বে ২০২৩ লস অ্যাঞ্জেলেসে একই রকম গণ-লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল (https://www.youtube.com/watch?v=Po4Jo834eos)। একই বছর ফিলাডেলফিয়াতে গণ-লুটপাটের ঘটনায় ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল (https://www.youtube.com/watch?v=e5kOHGwmqjc)। এছাড়া, শপ-লিফটিং বা সুপারশপ থেকে চুরির ঘটনায় আমেরিকা পৃথিবীতে চ্যাম্পিয়ন এবং প্রতি চারজন আমেরিকানের মধ্যে অন্তত একজনের জীবনের কোন না কোন সময়ে এই শপ-লিফটিং এর ‘গর্বিত’ অভিজ্ঞতা রয়েছে (USA Today, August 2024) (https://www.usatoday.com/story/money/2024/08/11/shoplifting-on-the-rise/74693321007/)। এমনকি বিষয়টি এতটাই ‘স্বাভাবিক’ ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে চলে এসেছে যে, চুরির পরিমাণ ৯৫০ ডলারের উপরে না হলে পুলিশ কোন লিখিত অভিযোগও গ্রহণ করে না (Why Shoplifting Is Now De-Facto Legal In California?, Hoover Institution; https://www.hoover.org/research/why-shoplifting-now-de-facto-legal-california)।
মূলত: আমেরিকার পুরো অর্থনীতি হলো একটি ফাঁপানো বেলুন এবং এই রাষ্ট্রটির পুঁজিবাদী ‘অর্থনৈতিক মডেলের’ চুড়ান্ত ব্যর্থতার প্রমাণ হলো এই গণ-লুটপাট ও নিকৃষ্ট চৌর্যবৃত্তি পেশার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা। শুধু তাই নয়, লেখাপড়া ও দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য ১৮-২৫ বছর বয়সী আমেরিকান নারীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন ওয়েবক্যাম ভিত্তিক ‘প্রাইভেট’ পর্ণোগ্রাফিতে যুক্ত, যা সম্মানের পাত্র নারীদের মর্যাদা রক্ষা ও আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিতে এই রাষ্ট্রটির স্বদিচ্ছার অভাব ও ব্যর্থতার পরিচায়ক। ফলে, বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদের এই ব্যর্থ ‘অর্থনৈতিক মডেল’ ফেরি করা এবং মুসলিম দেশগুলোকে মানবাধিকার ও নৈতিকতার ছবক দিয়ে বেড়ানোর কোন যৌক্তিক অধিকার আমেরিকার নেই।
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলের ঘটনাকে ফিলিস্তিনের গাজায় আমেরিকা-ইসরাইলের নির্মমতম গণহত্যার প্রতিফল হিসেবে মুসলিম উম্মাহ্ সোশাল মিডিয়ায় উদযাপন করছেন। প্রকৃত সত্য হলো: মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ কাফিরদেরকে তাদের অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘনের কারণে অনেক আগেই পরিত্যাগ করেছেন এবং তাদের সকল অপকর্ম ও ষড়যন্ত্রকে পূর্ণ নজরদারির মধ্যে রেখেছেন! আল্লাহ্ মুসলিমদের সাথেই আছেন এবং মুসলিম উম্মাহ্ বিজয়ের শর্ত পূরণ হিসেবে কাফিরদের বস্তুগত সক্ষমতার ভয়কে পরাস্ত করে খিলাফত পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও ‘মরণপণ’ প্রচেষ্টায় লিপ্ত হলে আল্লাহ্ তার গায়েবী সাহায্যের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়ে উম্মাহ্-কে চূড়ান্ত বিজয় উপহার দিবেন। এতে সা’দ বিন মুয়ায (রা.)-এর উত্তরসূরীদের জন্য সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে। “হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্-কে সাহায্য করো, তবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন। এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে দৃঢ়পদে অধিষ্ঠিত করবেন” (সূরা মুহাম্মাদ: ০৭)
- রিসাত আহমেদ